শাহরিয়ার কবির, নিজস্ব প্রতিবেদক।। অবশেষে পাইকগাছার দেলুটী কালিনগরের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। ৫ম দিন সোমবার ৫ হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে বাঁধ মেরামত কাজ সম্পন্ন করে। এদিকে টানা ৫ দিন পানি বন্দি থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন দুর্গত মানুষ। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকলেও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত নৌযান না থাকায় দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌছাতে ভোগান্তিতে পড়ছেন ত্রাণ বিতরণকারীরা। গবাদি পশু ও শিশু সন্তানদের নিয়ে ওয়াপদার রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে শত শত পরিবার। দ্রæত পানি নিষ্কাসন সহ বাসস্থান নির্মাণে সরকারি-বেসরকারি সহায়তার দাবী জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার উপজেলার দেলুটী ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ২২ নং পোল্ডারের ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়ে ১৫ হাজার মানুষ। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়নে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করলেও জোয়ারের পানিতে মেরামতকৃত বাঁধ ভেসে যাওয়ায় সবচেষ্টা বিফলে যায়। অবশেষে সোমবার দেলুটী ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল ও সোলাদানার সাবেক চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হকের নেতৃত্বে ৫ হাজার মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে বাঁধ মেরামত কাজ সম্পন্ন করেন। এদিকে টানা ৫ দিন গবাদি পশু, শিশু সন্তান নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন দুর্গত মানুষ। নোয়াই গ্রামের করবী মন্ডল জানান, আমাদের বেশির ভাগ কাঁচা ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এখন থাকার জন্য পর্যাপ্ত তাবু প্রয়োজন। শিশু সন্তানদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বলে জানান হরিণখোলা গ্রামের সাধনা গোলদার। রুমি মন্ডল জানান, বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নীচে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে ছিলাম। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী তাবু স্থাপন করে দেওয়ায় তাবুর মধ্যেই পরিবার নিয়ে জীবন ধারণ করছি। এদিকে দুর্গত মানুষের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকলেও দুর্গত মানুষের কাছে পৌছাতে ভোগান্তি হচ্ছে ত্রাণ বিতরণকারীদের। হৃদয়ে পাইকগাছা সংগঠনের রইচ উদ্দীন বলেন, বিগরদানা থেকে দারুনমল্লিক পর্যন্ত একটি মাত্র রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে ত্রাণের গাড়ী চলাচল সহজ নয়। পাশাপাশি ত্রাণ সামগ্রী নামানোর পর দুর্গত এলাকার ভিতরে অবস্থানরত মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌছানোর জন্য পর্যাপ্ত নৌযান নাই। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ত্রাণ বিতরণকারীদের। ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল বলেন, বাঁধ মেরামত হলেও পরবর্তী দ্রæত পানি নিষ্কাসন, কৃষি ও বাসস্থান পুনর্বাসন জরুরী। এ ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সহায়তার দাবী জানান স্থানীয় এ জনপ্রতিনিধি।