সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সাতক্ষীরায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা ধরণের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাগুলোর মধ্যে ছিলো ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, তৈলাক্ত কলাগাছে উঠা, দাঁড়িয়াবাঁধা, যেমন খুশি তেমন সাজো, ক্রিকেট, ফুটবলসহ গ্রামবাংলার বিনোদনধর্মী নানা খেলা।
ঈদের দিন (শনিবার) বিকেল থেকে শুরু হয়ে সোমবার বিকেলে শেষ হয় গ্রামবাংলার এ ঈদ আয়োজন। ঈদ আয়োজনে জারি গানেরও আসর বসে।
জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী তলুইগাছা মাঠপাড়ায় ৩দিনব্যাপী মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক মেলার অংশ হিসেবে প্রথমদিন লাঠি খেলার আয়োজন করে স্থানীয়রা।
সীমান্ত চোরাচালান ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও মাদক বিরোধীতা সচেতনতার অংশ হিসেবে প্রতিবছর তলুইগাছা গ্রামের মাঠপাড়ায় ৩ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে লাঠিখেলা, ২য় দিনে জারি গান এবং ৩য় দিনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আয়োজন শেষ হবে।
লাঠিখেলায় অংশ নেন সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের ঘরচালা গ্রামের কামরুল ইসলামের দল ও কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রামের আকবর আলীর দল। দুটি দলের মোট ১৭ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। পবিত্র ঈদ উপলক্ষে এ খেলা দেখতে বাঁশদহা, কুশখালি ও কেড়াগাছি ইউনিয়নের হাজারো নারী পুরুষ ভিড় জমায়। খেলায় অংশগ্রহণকারি দু’দলকে ১০ হাজার টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়। দর্শক তলুইগাছা গ্রামের সাহেব আলী, কেড়াগাছির আনজুয়ারা বেগম, কুশখালির ছহিলউদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এই লাঠিখেলা। আগে অনেক জমজমাট হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বিনোদনের উৎস এই খেলাটি। করোনাকাল ছাড়াও বেশ কয়েকবছর যাবত বন্ধ থাকার পর পুনরায় তা চালু করা হয়েছে। আপামর জনগণ এই খেলা চালু হওয়ায় খুশীতে মেতে উঠেছেন।
বাঁশদহা ইউপি সদস্য মোঃ শাজাহান আলী জানান, হারিয়ে যাওয়া লাঠিখেলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এ সচেতনতামূলক মেলার মাধ্যমে সীমান্ত চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধসহ মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সকলকে এগিয়ে আসার আহবানর জানান।
এদিকে আশাশুনি উপজোর বড়দল ইউনিয়নের জামালনগর জেডি মাছুম স্মৃতি সংঘের আয়োজনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩দিনব্যাপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার অনুষ্ঠানে সমাপনী দিনে উপস্থিত ছিলেন বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ সানা। হাজারো বিনোদন প্রেমী দর্শকের উপস্থিতিতে কানায় ভরে ওঠে মাঠ। এছাড়া স্থানীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও নানা বয়সী মানুষের ভীড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে।