১৭৪ ধারায় একটি মামলা করে এসেছি
গোলমেলে ট্রাফিক, ব্যস্ত রাস্তা, গাড়ির হর্ণ, অস্থির চালক –
হঠাৎ মৃত্যু;একটা অপমৃত্যু!
বুক ফেটে বেরিয়ে যেতে পারে বাতাস যখন তখন,
যখন তখন ঘটতে পারে মৃত্যুক্ষুধায় জর্জরিত হায়েনার ছোবল
কিংবা হতে পারে ভেদবমি;মৃত্যুর গন্ধ লেগে থাকা সুরভিত কোন রাস্তায়!
এ দায় কার?
আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করে এসেছি!
জান্নাতি ফলের গায়ে ফরমালিনের বিষাক্ত আঁতর,
চোখ বুঁজে খেয়ে হতে পারে কোষের মৃত্যু ধীরে!
ক্ষতি কি?
তাতে কেউ দু’পয়সা কামিয়ে করবে সমাজের বলৎকার।
তারপর বিশুদ্ধ হবে গিয়ে তীর্থস্হান।
ষোল পুরুষের পাপ হবে মাফ।
আর আমি দু’ফোটা দুধের ঋন না শোধ করতে পারা হতাশ অবোধ ; কোন এক অভাগী মায়ের।
মৃত্যুর আগেই যদি অপমৃত্যুই হয়, তবে এ দায় কার?
তাই আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করে এসেছি!
লঞ্চের টিকিট কাটার আগেই আমি একটা মামলার ফাইল সাজিয়েছি।
কি জানি এ যাত্রায় পদ্মা পাড়ি দেওয়া ঘটবে কি না?
সেই কবে বৌ-এর আঁচলে শেষ মুখ মুছে এসেছি
সেই কবে দেখেছি একফালি চাঁদ প্রেয়সীর কোলে শুয়ে।
সেই কবে প্রিয়ার কপোলে চুম্বন এঁকেছি সিগারেট ফুঁকে।
বেচারীর ১০১ টাকা দেনমোহর আজও শোধ দিতে পারি নি, জনসমাগমে ভরা এই বেতাল লঞ্চে হতে পারে শেষ ঘুম।
স্ত্রীর হকের খাতায় হিসাবের গরমিল কাটতেই ক্ষমার দরখাস্তে হাশরের মাঠে অজুহাত হয়ে রবে একটি মামলার দলিল!
১৭৪ ধারায় করা হতাশ যুবকের একটি অপমৃত্যুর মামলা দলিল।
আমার মগজে কারফিউ,অনুর্বর মস্তিষ্কে জোরপূর্বক চাষ আনাড়ি শিক্ষাব্যবস্থার,
যেপথে বাংলা পঞ্চাশ বর্ণের চলাচলের পথ অবরুদ্ধ,
সেখানেও চেষ্টা চলে নিউটন,আইনস্টাইনের সূত্র সিদ্ধ!
১০ ইঞ্চি পিঠ ২০ ইঞ্চি ব্যাগ বয়ে বেড়াচ্ছে গাধার লাহান;
আজ মেরুদন্ড আমার ন্যূজ।
পাঁজরে ঘুমিয়ে আছে মধ্যবিত্তের স্বপ্ন
রয়ে গেছে দু’মুঠো ভাতের গন্ধ কিংবা
সাদা জামা গায়ে উচ্চবিত্তের ফুটানি।
জ্ঞান গিলতে না পেরে পরতে হতে পারে গলায় ফাঁস!
এ দায় কার?
তাই আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করে এসেছি!
হতে পারে রানা প্লাজার মত ধ্বংস কিংবা পাহাড় ধস
হতে পারে আকাশভাঙা বজ্রপাত
কিংবা হতে পারে অপরিকল্পিত বৈদ্যুতিক শক
কিংবা কপালে আছে অদিতি-নুসরাতের মত কুকুরের লালসায় সিক্ত যৌনপীড়ন,
হয়ত হয়ে যাবো কোন যৌন রাক্ষসের এক রাতের আহার
হয়ে যাব জীবন্ত লাশ!
তাই আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করে এসেছি।
আমি স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়েই –
একটি অপমৃত্যুর মামলা করে এসেছি!
লেখকঃ
ফাতেহ মুনির
গনিত বিভাগ, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ।