রামপ্রসাদ কর্মকার, কপিলমুনি প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় দ্রুত পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, জলবায়ু ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় গ্যাস ও এলএনজি ব্যবহার বাড়ানো কোন সমাধান নয়, বরং সবুজায়ন-নবায়নযোগ্য জ্বালানিই ভবিষ্যৎ। তাই গ্যাস ও এলএনজিতে অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। কয়লাসহ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে হবে।
আজ শুক্রবার ‘গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন এন্ড ফুসিল ফুয়েলস ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ফুটবল খেলা ও সাইকেল র্যালী শেষে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি স্মৃতিসৌধ চত্বরে মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তৃতায় এ আহ্বান জানানো হয়। ওয়াটারকিপারস-বাংলাদেশ, ব্রতী, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এবং সচেতন সংস্থা আয়োজিত কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন সাবেক কৃতি ফুটবলার শেখ আব্দুর রশিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, পাইকগাছা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল আজিজ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের নেতা দুলাল দেবনাথ, অধ্যক্ষ শিমুল বিল্লাহ বাপি, অনির্বাণ লাইব্রেরির সহ-সভাপতি মানিক ভদ্র ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দেবনাথ, যুবলীগ নেতা প্রদীপ দত্ত, সচেতন সংস্থার সভাপতি বিদ্যুৎ বিশ্বাস, পরিবেশ কর্মী অমর ঘোষ, নদী কর্মী আলাউদ্দিন মোড়ল প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তেনে ক্ষতিগ্রস্থদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের কপ-২৭ সম্মেলনে ৮০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা পর্যায়ক্রমে কয়লা নির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থা হতে বেরিয়ে আসবে। এরআগে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে চাইলেও অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়িক স্বার্থরক্ষায় বহু দেশের বিরোধীতায় সেসকল উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি। বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর বিরোধীতার ফলে ওই সকল পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। বরং বিভিন্ন বৈশ্বিক ফোরাম ও সম্মেলনে জলবায়ু কূটনীতিতেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করাই বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিসম্পন্ন দেশগুলো প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের বিবেকমান মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভয়াবহ দূর্যোগের ঝুঁকিতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নানামূখী সংকট দেখা দিচ্ছে। অথচ সংকট মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ নেই। বরং জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের জনগণ সবসময় বৈষম্যের শিকার। বরাদ্দের অভাবে সেখানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো আটকে আছে। এই অবস্থায় ওই অঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা ও দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।