তালা প্রতিনিধিঃ তালার শালিখা গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের দেয়া বরাদ্দের অর্থ থেকে এলাকার একটি মহল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। ওই মহলকে অবৈধভাবে টাকা না দিলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হুমকি প্রদান সহ নানাবিধ হয়রানী করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষককে বারবার পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করায় এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, এসএমসি নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২৪ নং শালিখা গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কতিপয় ব্যক্তি বছরের পর বছর বিদ্যালয়ের অনুকূলে আসা স্লিপ সহ অন্যান্য বরাদ্দ থেকে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। সর্বশেষ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ফরিদা পারভীন যোগদান করার পর ওই মহলটি ধারাবাাহিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নেবার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সে সুযোগ না দিলে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে অর্থলোভী ওই চক্রটি।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক ফরিদা পারভীন জানান, তিনি অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর বিদ্যালয়ের উন্নয়নে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহন করেন। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ সরকার ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং মাননীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক ১লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তি সহ বিগত আর্থিক বছরেও সরকারী বরাদ্দ পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী এসএমসি সভা করে স্বচ্ছতার সাথে এসকল অর্থ ব্যয় করে বিদ্যালয় পাঠ কার্যক্রমের উন্নয়ন করা হয়। প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন এবং প্রাপ্ত অর্থ যথাযথ ভাবে ব্যয় করায় শালিখা ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার মাছরুরা খাতুন ও সহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম সহ সংশ্লিষ্টরা তদন্তপূর্বক কাজ সমাপ্তির জন্য প্রত্যায়নপত্র প্রদান করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের এসএমসির সাবেক সভাপতি ইমরান হোসেন সরদার বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের বরাদ্দ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা দাবী করে। এই টাকা না দেওয়ায় তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসে বানোয়াট অভিযোগ করেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য তুলে অপপ্রচার শুরু করেন। এবিষয়ে তদন্ত হলে অভিযোগকারী ইমরান হোসেন নিজের ভূল স্বীকার করে গত ০১/১০/২০২২ তারিখে লিখিত ভাবে তার অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে তিনি আবারও টাকা দাবী করে এবং টাকা না দিলে সামাজিক ও মানষিক ভাবে ক্ষতিসাধন করার হুমকি প্রদান করলে বাধ্য হয়ে তাকে নিজের বেতনের টাকা থেকে চাঁদা দিতে হয়।
শিক্ষক ফরিদা পারভীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দরিদ্র শেণির মানুষের বসবাসস্থল গুচ্ছগ্রামের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, এসএমসি এবং শিক্ষা অনুরাগী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের এসএমসির সাবেক সভাপতি ইমরান সরদার সহ কতিপয় স্বার্থান্বেসী মহলের অবৈধ চাহিদা পুরন না করায় তারা পরস্পর যোগসাজসে প্রতিনিয়ত হুমকি, অপপ্রচার, প্রশাসনের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের সহ নানাভাবে হয়রানী করে যাচ্ছে। এঘটনায় তিনি শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত রাখার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এব্যপারে বিদ্যালয়ে এসএমসি সভাপতি শিক্ষক মো. ছাকির হোসেন জানান, আমি দায়িত্ব পাবার পর আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে যা’ যথাযথ ভাবে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক টাকা আত্মসাৎ করেছে এমন কোনও তথ্য আমরা অদ্যবদী পাইনি। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আবারও অভিযোগ করা হয়েছে, তদন্তের দিন আমি সহ এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা সেখানে উপস্থিত থাকবে।