শাহরিয়ার কবির, নিজস্ব প্রতিবেদক।।খুলনার পাইকগাছায় শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে জনজীবন।সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে পুরা এলাকা, সঙ্গে বয়ছে হিমেল হাওয়া। হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রা কম।পৌষের মাঝামাঝি এসে জেঁকে বসেছে শীত। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে এসেছে। এতে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আরো চার দিনে এমন পরিস্থিতির উন্নতির কোনো আভাস নেই। আবহাওয়া অফিস বলছে, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতের অনুভূতি বাড়ার কারণ হচ্ছে সূর্য দেখা না যাওয়া।সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
রাত ৯টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পাইকগাছা পৌরবাজার ,সরল, গদাইপুর,আগড়ঘাটা,কপিলমুনি,বাঁকা কাটিপাড়া, কাটাখালী,চাদখালি গড়ইখালী, বাজারসহ রাস্তাঘাট। রাত যত গভীর হয় কুয়াশা ততই বাড়তে থাকে। ভোরে ঘন কুয়াশার সেই আস্তরণ যেন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়তে থাকে। ঘন কুয়াশায় শীতে কাহিল হয়ে পড়লেও জীবিকার তাগিদে সকালেই বের হন খেটে খাওয়া মানুষ। তবে ঘন কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমেছে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কাপড়ের দোকানে বৃদ্ধি পাচ্ছে সোয়েটার, মাফলার, কান টুপি, মাথার টুপি, হাত মোজা, পায়ের মোজা, জ্যাকেট, প্যান্ট ইত্যাদি। নিত্যনতুন ডিজাইনের ছোট-বড় সকলের জন্য শীতের কাপড় বিক্রয় করছে দোকানীরা। বাজার বা জনবহুল এলাকার রাস্তার দু’পাশে হকারদের ব্যবসাও জমজমাট। তবে আগের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা বিপাকে ক্রেতারা। বিকালের পর থেকে রাস্তার পাশের হকারদের দোকানে উপচে পড়া ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়।পাইকগাছা পৌর বাজারে কাপড়ের ব্যবসায়ী গৌতম বলেন এবার শীতের কাপড় এর দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা একটু হিমসিম খাচ্ছে।কাটিপাড়া বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী গোবিন্দ জানান হঠাৎ শীত পড়ায় কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে।কাটিপাড়া ভাই ভাই গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলেন এবার শীতের বস্ত্র চাহিদা মোটামুটি ভালো কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রচন্ড শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না,খেটে খাওয়া মানুষ। পাইকগাছা পৌর বাজারে চায়ের দোকান মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড শীতের কারণে বের হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে কিন্তু কি করবো এক দিন দোকান বন্ধ থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।পাইকগাছা গোপালপুর গ্রামের দিনমজুর আফছার আলী বলেন, আমরা অনেক সকালে কাজে বের হই আজ কয়েকটি কাজে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে এত শীতে কাজ করা যায় না। কিন্তু কিছুই করার নেই। কাজ না করলে সংসার চলবে কেমন করে। কাজের উপরে আমাদের সংসার চলে।
এদিকে শীত জেঁকে বসার কারণে ভোগান্তির কবলে পড়ছেন চলতি বোরো মৌসুমে বীজতলা তৈরিতে নিয়োজিত চাষিরা। জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলা সদরের মহাসড়কগুলোর অধিকাংশ রাস্তায় ঘন কুয়াশায় যাত্রী ও মালবাহী যানগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। প্রতিদিন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে।