কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার কয়রায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে বিএনপি নেতাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কয়রা উপজেলার অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এ অভিযোগ করেন কয়রা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হাছান।
লিখিত বক্তব্য এম এ হাছান জানান,গত ১৭ অক্টোবর আমার নাম উল্লেখ পূর্বক কয়েকটি অনিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকায় “সাংবাদিক সংগঠনের অফিস দখল নিয়ে ব্যক্তিগত অফিস বানালো বিএনপি নেতা হাসান” শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তথাকথিত সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তারিক লিটু ভুয়া তথ্য দিয়ে এ প্রতিবেদন করায়। উক্ত প্রতিবেদনটি আমার কোন বক্তব্য ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান,কয়রা বাজারে অবস্থিত ইমান সুপার মার্কেটসহ কয়রা উপজেলায় আমার ব্যক্তিগত কোন অফিস নাই।উক্ত মার্কেটে অবস্থিত একটি ঘরে কয়রা সাংবাদিক ফোরাম নামে কোন অফিস ছিল কিনা তা আমার জানা নাই। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম উক্ত মার্কেটের মালিক মো. ইমান আলী সান কে তথা কথিত সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তারিক লিটু বিগত ১৮ মাস ঘর ভাড়া না দিয়ে সাংবাদিকতা ও আওয়ামী দোসরদের প্রভাব খাটিয়ে চলতো। যার প্রেক্ষিতে পালা বদলের পর সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ইমান আলী সানা কয়রা থানায় টাকা আদায়ের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত বিষয়টি নিয়ে সে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। ইমান আলী সানা আমার নিকট আত্মীয় হওয়ায় আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে ভুল বুঝিয়ে বিষয়টি আমার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তথা কথিত সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এমপি বাবুর দোসর তারিক লিটু কয়রার বিভিন্ন মানুষকে বিগত দিনে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ সহ কয়রা থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি রয়েছে। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে কতিপয় নেতা কর্মীদের ছত্রছায়ায় সে এ অপকর্মগুলো পরিচালনা করতো। তারিক লিটু জামাত বিএনপির নেতা কর্মীদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন দিয়ে গায়েবি ও নাশকতা মামলা করাতো এবং তার বড় বাণিজ্য ছিল নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়ে অর্থ আদায় করা। তাকে ম্যানেজ না করতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ঢুকিয়ে দেওয়া হতো। সে আওয়ামী নেতা কর্মীদের দোসর থাকার কারণে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। তার পিতা কয়রা সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক, তার ফুফু (সুমাইয়া আমিন লতা) উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক, এছাড়া তারিক লিটু বিগত দিনের ছাত্রলীগ নেতা ছিল।
তারিক লিটু ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গীবাদের উসকানি দেওয়া ও অপসাংবাদিকতার দায়ে প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার এবং একাডেমি হতে সাময়িক বহিষ্কার হয়। স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর সে কয়রা থেকে গা ঢাকা দেয়। সম্প্রতি সে আবারও এলাকায় ফিরে এসে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর রাত্রে তার ফেসবুক আইডিতে আমার নামে মারধরের অভিযোগ করে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। যে ঘটনাটি আমি জানিনা। কে বা কারা করেছে তা আমার জানা নেই। সে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নিজে মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার পায়তারার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিষয়টি স্বরজমিনে তদন্ত করলে সকল রহস্য উদ্ঘাটন হবে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট সত্য ঘটনাটি উন্মোচন পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
জানতে চাইলে কয়রা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তরিক লিটু বলেন,আমাদের সাংবাদিক সংগঠনের অফিস দখল করায় আমরা সংবাদ প্রকাশিত করার পর আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে গুরুতর আহত করে। বর্তমান আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। বিএনপি নেতা কতৃক আমাদের সাংবাদিক ফোরামের অফিস দখল ও আমাকে হত্যা চেষ্টার বিচার দাবি জানাই।
এসময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবু সাঈদ বিশ্বাস, মো. কোহিনুর ইসলা, বিএনপি নেতা শহিদুল্যাহ শাহিন, ইয়াকুব আলী মুনছুর রহমান, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইছানুর রহমান, আকবার হোসেন, আছাদুল ইসলাম, মাসুদুল আলম, ডাবলু, দেলোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নুর ইসলাম খোকা, সদস্য সচিব ডিএম হেলান উদ্দিন, মাসুম বিল্লা, ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ বিল্যাহ সবুজ,সদস্য সচিব মাহমুদ হাসান, ছাত্রনের ইমরান হোসেন জিএম আকবার হোসেন, , কৃষকদলের সদস্য সচিব আবু সাঈদ মালী, মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান লিটন, জিয়া, প্রজন্ম দলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, হিন্দু, বৌধ্য, খিস্ট্রান ঐক্য ফ্রন্ট নেতা অর্পণ সানা সহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।