ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  1. আইন-অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আবহাওয়া
  4. আশাশুনি
  5. কলারোয়া
  6. কালিগঞ্জ
  7. কৃষি
  8. খুলনা
  9. খেলা
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. টপ ৪
  13. তালা
  14. দেবহাটা
  15. ধর্ম
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘স্বাধীনতা’ কি নিছক একটি শব্দ মাত্র ?

Sk Rayhan
ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ১২:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজ ১৬ ই ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস।
কারো কারো কাছে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস একটা উদযাপনের নাম।কিন্তু আমার কাছে এই দিনটা একটা গর্বের বিষয়,একটা উৎসাহ-উদ্দীপনার বিষয়।আজ আমরা সামান্য সত্য বলতে ভয় পাই।অথচ এই বিজয়ের জন্য লাখ লাখ বীর সন্তান তাদের জিবনকে বন্দুকের নলের সামনে তুচ্ছ করে দিয়েছিলেন।তাদের কাছে আজ আমরা শুধুই একটা কাপুরুষ,কৃতঘ্ন আর ভীরু জাতি।তাদের কাছে আমরা চির ঋণী।আজ এই স্বাধীনতার জন্য কত আয়োজন। আজ রাস্তায় রাস্তায় খিচুড়ি আর বিরিয়ানির ছড়াছড়ি।মাইকে সারাদিন শেখ মুজিবের সেই ঐতিহাসিক ভাষণে বাতাস ভারী হয়ে যাবে।কিন্তু আমাদের প্রজন্ম কি জানে কে ছিলেন ঐ শেখ মুজিবুর রহমান।হয়ত জানে না।হিমালয়ের মত বিশাল এই মানুষটাকে আমরা কয়জন মনে-প্রাণে ধরেছি।তাঁর আদর্শ আমরা কয়জন সাদরে গ্রহণ করেছি।পারি নি আমরা। আমরা ব্যর্থ। আজ তাই স্বাধীনতা শব্দটি শোনা মাত্র আমি লজ্জায় মরে যায়।শত বছরের অপরাধবোধ আমার গলা টিপে ধরে।কারণ স্বাধীনতা শব্দটি আজও আমাদের কাছে নিছক একটি শব্দ মাত্র। স্বাধীনতার এত বছরেও আমরা স্বাধীনতার তাৎপর্য বুঝি নাই।আমরা চামচার দল। আমাদের কাছে স্বাধীনতা মানে উদযাপন।একদিন ব্যানার নিয়ে হৈ হুল্লোড়ে মাতি,তাতেই দেশপ্রেমের গাঁজন উঠে যায়। আমরা খুবই কৃতঘ্ন জাতি।তার বড় প্রমাণ ১৫ ই আগস্ট ১৯৭৫।যে ব্যক্তি তাঁর জিবন আমাদের দেশের জন্য বাজি রেখেছেন, তাঁকে আমরা কি দিতে পেরেছি। আসলে বাঙালি হিসেবে বোধহয় আমরা একটু বেশি কৃতঘ্ন আর স্বার্থপর।আচ্ছা, স্বার্থনীতি নামে কোন বিষয় থাকলে, বোধহয় বাঙালি এ বিষয়ের জনক’ই হতো।আমরা প্রকৃতপক্ষে আজও স্বাধীন নই।পাকিস্তানের চেয়েও বড় শত্রু আমাদের দেশে আছে।আছে বলেই তো, বঙ্গবন্ধুকে যে পাকিস্তান মারতে পারে নি, তাদের দোসররা মিছরির ছুরি হয়ে ফালা ফালা করে দিল তার ঠান্ডা বুক।যেখানে ভালবাসা ছিল ফ্রিজিং।১৫ আগস্টের রাতই বড় স্বাক্ষী আমাদের পরাধীনতার। যে জাতি আজও ১০০ ডায়াল করলে পুলিশ পায় না বরং ১০০ টাকা দিলে নিরাপত্তা পায়।তারা কেমনে স্বাধীন আমার জানা নাই।যে দেশে শিক্ষক নিরাপদ নয়, ছাত্রদের কাছে।যে দেশে ছাত্রী নিরাপদ নয় শিক্ষকের কাছে।যে দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে স্বজনপ্রীতি আর স্বৈরাচারী। সে দেশ কিভাবে স্বাধীন হতে পারে?আমরা ২০০ বছর ব্রিটিশদের কাছ থেকে পোড়া ভাত খেয়েছি বটে,যদিও ‘৭১ এ পান্তা পেলাম এক মুঠো।তবুও আমাদের দাঁত ভাঙে আজও পাথুরে ঝিলে।ঐ ঝিল যতদিন আছে, ততদিন আমরা নিরাপদ নই।মানে আমরা কোনভাবে স্বাধীন নই। আজ মুজিব সেনার অভাব নাই।পঁচাত্তরেও ছিল না।কই সেদিন তো কেউ নব্য মুজিবের গর্জনী তুলে নি।কই কেউ তো একজন মুজিবকে বাঁচাতে আসে নি।আজ আমরা মুজিব কোর্ট পরে মুজিবের আদর্শ ধারণ করি।আদর্শ কয়জন গলে পরেছি?আজ স্বাধীনতা,বিজয়,মুজিব এসব আমাদের কাছে স্বার্থ হাসিলের এক মোক্ষম উপায়। চোখে চশমা, গাঁয়ে মখমলি কোর্ট আর তর্জনী গর্জনী দিলেই মুজিব হওয়া যায় না।মুজিব হতে হলে ৩২” ইঞ্চি বুকের সম্পুর্নটা হৃদয় হতে হয়।কারণ শান্তি একমাত্র হৃদয়ের পথে। চোখ ভর্তি আগুন চাই আগুন।প্রতিশোধের নয়,বরং প্রতিবাদের।
ক্ষমা করেও মহৎ হওয়া যায়। ইঞ্চি ইঞ্চি বাংলায় আজ লক্ষ চোরের ঘাঁটি।এ ঘাঁটি উপড়াতে চাই বিদ্রোহ,চাই বিদ্রোহে পুর্বরাগ।সেদিনের অগ্নিপুরুষ শেখ মুজিব।যিনি বলেছিলেন, “৭ কোটি কম্বলের ভেতর আমার কম্বলটা কই।” এ বাংলা আজ চোরের খনি।আমি বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে বলছি না।আমি শুধুমাত্র শেখ মুজিবের আদর্শের কথা বলতে চেয়েছি।আজ একজন অগ্নিপুরুষ খুব দরকার।বুকে বন্দুক তাক করে কেউ ট্রেগার চেপে দাও,বুক থেকে কাপুরুষের রক্ত ঝরে যাক! হে বাঙালি,চলো মরি।তাতে যদি বীর প্রজন্মের কাছে ঋণের বোঝা কিছুটা কম হয়। আমরা মরে আবার জন্ম নেব অগ্নিপুরুষ হয়ে।ঠিক ফিনিক্স পাখির মত।আমরা প্রতিবাদী, পুনঃজন্মের অগ্নিপুরুষ হবো।আমি, তুমি এবং সে। মানে আমরা আরেকবার ঝড় তুলবো রাজপথে। পিচঢালা পথ আগুনে ভেজাব,রক্তে করব লাল! হে বাঙালি, আমরা স্বাধীন একথা বলার আগে দেশকে পরিপূর্ণ স্বাধীন করো।আমরা যদি স্বাধীন হই তবে, বঙ্গবন্ধু খুন হলো কেন?বাংলার বাতাসে আজও গোঙানির শব্দ ভাসে।তুমি কি দেখ না, এই বাংলার হাহাকার।দেখ না কভু সাত খুন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়।আগুনে পোড়া শত সংখ্যালঘুর ঘর! আমাদের ফুসফুসে জমে আছে-ধ্বসে পড়া ভবনের নিচে গলিত লাশের গন্ধ।পদ্মায় ডুবে মরা হাজারো প্রাণের নিস্পন্দন!আমার কানে বিষাক্ত আওয়াজ বাজে
রাস্তায় হাজারো মানুষের সামনে পিটিয়ে মারা রিফাতের একটু বাঁচার জন্য বুকফাটা চিতকার।কেউ এগিয়ে না আসার লজ্জা আমাকে পুড়িয়ে মারে।আবরার ফাহাদের ,আমায় মেরো না বলে অনুনয়! আমি চোখ বুজলেই দেখি-আগুনে পু্ড়ে যাওয়া নুসরাত,দেখি তনু-খাদিজা-রাজন, দেখি বিশ্বজিৎ -অভিজিৎ – নাদীয়া!
দেখি হীরামনি,দেখি ধর্ষিতা মাজেদা!দেখি ছেলের সামনে ধর্ষিতা মা, দেখি ভাইয়ের সামনে ধর্ষিতা বোন।গুম হওয়া সন্তানের নীরব কান্না।দেখি রানা প্লাজায় গলিত লাশের দগদগে রক্ত বন্যা!দেখি সাগর-রুনির মেঘ!দেখি এমপির গুলিতে গুলিবিদ্ধ সৌরভ,গুলিবিদ্ধ মেজর সিনহা!
আমি দেখি সীমান্তে ঝোলা ফেলানীর লাশ,দেখি বাংলার গলিতে জঙ্গীবাদের ত্রাস!আমি বুক পেতে দিলাম, মরবোই!
একাত্তরের প্রজন্ম তাদের হাড় পুড়িয়ে কয়লা রেখে গেছে।আজ আমাদের উচিত সেই কয়লায় জ্বালাময়ী রুপ দেওয়া।
হে বঙ্গবন্ধু, আমরা বড়ই অকৃতজ্ঞ এবং কৃতঘ্ন।
আজ অতি আফসোসের সাথে বলতে হয়, স্বাধীনতা শব্দটি নিছক একটা শব্দ মাত্র। ইহার তাৎপর্য বোঝা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজও আমরা ব্যঙ্গ হই বাঙালি নামে। আমরা হুজুগে বাঙালি, নয় তো সুযুগে বাঙালি।যে জাতি নিজেকে ব্যঙ্গ করতে পারে, সে জাতি কখনোই বিজয়ের ঘ্রাণ নিতে পারে না।স্বাধীনতা তো তার কাছে রসিকতা। আমরা সেদিন স্বাধীন হবো যেদিন সত্য বলতে কুণ্ঠাবোধ হবো না।যেদিন শ্রমিক তার মালিকের কাছে মাথা নত করবে না।যেদিন আর খুন, গুম, ধর্ষন হবে না। আর যদি ব্যর্থ হই তবে এজাতির বলৎকার অবশ্যাম্ভাবী।

লেখকঃ
ফাতেহ মুনির
গনিত বিভাগ, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।