শোয়েব হোসেন (ঢাকা) : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি চালক মোঃ হোসেন মিয়া অবৈধভাবে বিভিন্ন সরকারি মালামাল বিক্রি করে গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।হয়ে গেছেন কোটি টাকার সাম্রাজ্যের মালিক!
জানা গেছে, হোসেন মিয়ার মা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী।সেই সুবাদে হোসেন মিয়া উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন।পরবর্তীতে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে হাতিয়ে নেন সোনার হরিণ সরকারি চাকরি!আজও তার চরম দূনীতির স্বর্গ রাজ্যেই বসবাস! স্বনামধন্য কোটিপতিও বটেই!
উত্তর সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে যুক্ত হওয়ার পরপরই বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় শুরু করেন ব্যাপক চুরি ও লুটপাট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক ও পরিবহন বিভাগের কয়েকজন কর্মচারীরা জানান, এই লুটেরা হোসেন মিয়া পরিবহন থেকে তার পছন্দের যান্ত্রিক বিভাগে ৩/৪ বার বদলি হয়েছেন এবং প্রতি বদলির জন্য দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা করে ঘুষ দিয়েছেন। সেই সাথে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গাড়ির বিভিন্ন মালামাল, যন্ত্রাংশ, তেল ইত্যাদি চুরি করে মালিক হয়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদের। তার সহোদর ভাই হাসান মিয়া একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। দুই ভাই মিলে ব্যাপক লুটপাট ও অনিয়ম করে বিশাল অর্থ কামিয়ে নিয়েছেন। হোসেনের অপর ভাই হাসান দুর্নীতি ও তথ্য গোপনের দায়ে ইতিমধ্যেই চাকরিচ্যুত সত্বেও বহাল তবিয়তেই এখনো সিটি কর্পোরেশনের কাজ করে যাচ্ছেন এবং বেতন উঠাচ্ছেন। আরও শোনা যায়, এরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সাবেক মেয়র তাপসের অনুসারী! এমনকি বিগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীর ৪৯নং ওয়ার্ডে এই হাসান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের ব্যাপক অর্থ সহায়তা করেন! এদের দেখার যেন কেউই নেই!এই হাসানের অপকর্মের বিস্তারিত পরবর্তীতে প্রকাশ করার প্রস্তুতি চলছে।
বিস্তারিত খবর নিয়ে জানা গেছে, হোসেন তার ব্যাপক দূর্নীতি ও চুরির অবৈধ অর্থ দিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে ৬৮/ডি নম্বরের প্লটটি ক্রয় করেছেন কয়েক কোটি টাকা দিয়ে। গাজীপুর সাভারে আরো বেশ কিছু জমি ক্রয় করেছেন। চলাফেরা করেন নিজ মোটরসাইকেলে যার মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে ৮ থেকে ১০টি একাউন্টে তার রয়েছে লক্ষাধিক টাকা। ডিউটি শেষ হবার পরে তাকে দেখলে আর চেনাই যায়না যে সে একজন সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িচালক।সরাসরি তার চলাফেরা একজন মিলিয়নিয়ারের মতো! বিগত সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে গেলেই দাপট কিংবা অর্থ দিয়ে তাকে থামিয়ে দিয়েছেন।
গণমাধ্যম কর্মীরা তার কাছে প্রশ্ন করেন আপনি একজন ময়লার গাড়িচালক হয়ে কিভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন!উত্তরে সে বলে ভাই সবাই কমবেশি কামায়। আপনারা নিউজ করে যদি আমার কিছু করতে পারেন কইরেন। তবে আপনারা কিছুই করতে পারবেন না।তাছাড়াও তার আচরণ সরাসরি বেপরোয়া ভাবে ভয়াবহ দাপট ও হুমকির দৃষ্টান্ত বহন করেছে!গোপন সুত্রে প্রকাশ, এই হোসেন মিয়া বিগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মিলে ব্যাপক অন্যায় অত্যাচার করেছিলো ছাত্রদের উপরে।
তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানা যায়, তারা এই বিষয়ে কিছুই নাকি জানেন না। হোসেন কিভাবে এত কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়লো তা দেশ ও জাতীর কাছে অবাক বিস্ময়। সকলের প্রশ্ন, সামান্য কয় টাকার বেতনে যেখানে থাকা খাওয়াই কষ্টকর,সেখানে কিভাবে হোসেন মিয়া কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়লো!হোসেন মিয়ার সমস্ত অপকর্মের ব্যাপারে তদন্ত আবশ্যক।এসব ঘটনার সহস্য উদঘাটনসহ উচিত বিচার জরুরি ভাবে দাবি করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার সাধারণ জনতা।