রামপ্রসাদ কর্মকার, পাইকগাছাঃ প্রকৃতিতে শরতের শুভ্রতার সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আমেজ শুরু। শিশিরভেজা ভোর আর শরতের কাশফুল জানান দিচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তা। শনিবার মহালয়ার মাধ্যমে শারদীয়া দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসবকে ঘিরে খুলনার পাইকগাছায় ১৫৫টি মন্দিরে দুর্গা পূজার প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরিতে কারিগরেরা শেষ মূহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় প্রতিমাগুলে হয়ে উঠছে অপরূপ। একই সঙ্গে শরতের দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণভাবে সাজাতে দিনরাত মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলায় বেশ কয়েকটি পূজা মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, রঙ তুলির শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবীদুর্গার প্রতিমা। কারিগররা প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে দেবীদুর্গা, লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৫৫টি মন্দিরে সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শনিবার মহালয়ার মধ্যে দেবী দুর্গার আগমনী আর আগামী ২০ অক্টোবর হতে দুর্গাপূজা শুরু হবে। জানা গেছে, পাইকগাছা পৌরসভায় ৬টি, হরিঢালী ইউনিয়নে ১৯টি, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১৯ টি, লতা ইউনিয়নে ১৪টি, দেলুটি ইউনিয়নে ১৫টি, সোলাদানা ইউনিয়নে ১২টি, লস্কর ইউনিয়নে ১৭টি, গদাইপুর ইউনিয়নে ৫টি, রাড়–লী ইউনিয়নে ২২টি, চাঁদখালী ইউনিয়নে ১৩টি ও গড়ইখালী ইউনিয়নে ১৩টি উপজেলায় সর্বমোট ১৫৫টি মন্দিরে দুর্গাপূজা হবে। উপজেলার কপিলমুনি মিলন মন্দির ও কপিলমুনি পূর্বপাড়া হরিসভা পূজা মন্দির দুর্গোৎসব পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দুর্গা প্রতিমা প্রদর্শনের আয়োজন করেছেন তারা। দুর্গাপূজাকে ঘিরে আধুনিক কপিলমনির রূপকার বিনোদ বিহারী সাধুর স্মরণে নানা আয়োজন রয়েছে এবারের পূজায়। এদিকে কপিলমুনি পূর্বপাড়া হরিসভা পূজা মন্দির ভারতের বেলুরমঠের আদলে প্যান্ডেল নির্মাণসহ বর্ণিল সাঝে সাজিয়ে তুলেছে প্রতিমাসহ মন্দির প্রঙ্গন। মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী জগদীশ চন্দ্র দে বলেন, লাইটিং থেকে শুরু করে ভারতের বেলুর মঠের আদলে গেটসহ প্যান্ডেল নির্মাণ কাজ চলছে। দেবী দুর্গার আগমনী বার্তায় বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হচ্ছে পূর্বপাড়া হরিসভা মন্দির। বোধন থেকে বিসর্জন অবধি থরে থরে সাজানো হয়েছে মায়ের আরাধনা। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী দেবাশীষ কুমার দে বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দুর্গাপূজার শুরু হবে। এদিন সন্ধ্যায় উদ্বোধনী মঞ্চে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বিজয় কুমার ঘোষ। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের খুলনা জেলা শাখার সভাপতি কৃষ্ণপদ দাশ। আরো উপস্থিত থাকবেন, খুলনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমান সাহা, সহ-সভাপতি চম্পক কুমার পাল, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তমাল কান্তি ঘোষ ও সাধন কুমার ভদ্র প্রমুখ। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী পূজা, সন্ধ্যা আরতী, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও রামায়ণের কাহিনী অবলম্বনে সীতা হরণ নৃত্যনাট্য। ২২ অক্টোবর মহাঅষ্টমী পূজায় রাত্র ৯ টায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাল্যরূপ ও কালী রূপ দর্শন নৃত্যনাট্য। ২৩ অক্টোবর মহানবমী পূজা ও রাত্র ৯ টায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও মহিষাসুর মর্দিনী। ২৪ অক্টোবর দেবীর বিজয় দশমী পূজা শেষে বির্সজনের মধ্যে পরিসমাপ্তি। কপিলমুনি পূর্বপাড়া হরিসভা মন্দির কমিটির কোষাধক্ষ্য শ্রী হিমাদ্রী শেখর দে বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও নতুনত্ব থাকবে। সাজ-সজ্জায় দৃষ্টিনন্দন হবে বেলুর মঠ আদলে প্যান্ডেল ও গেটের কারুকার্য। যা নজর কাড়বে আগত দর্শনার্থীদের।
সম্পাদক: এস,কে রায়হান
ঠিকানাঃ প্রধান কার্যালয়ঃ নিরিবিলি বাজার, শাহপুর, তালা, সাতক্ষীরা। মোবাইল ০১৭১২-৯৯৫৮১৮ ইমেইল: somajchetona1122@gmail.com
somajchetona