দেবহাটা প্রতিনিধিঃ দেবহাটায় সার্কাসের অশুভ প্রভাবে একরাতে ৪ দোকানে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে। এর ফলে পারুলিয়া এলাকায় চুরিসহ নানা অপরাধের মাত্রা বেড়ে চলেছে। জনমত আছে পারুলিয়ায় সার্কাস, যাত্রাগান হলেই জড়ো হয় চোরসহ দুষ্কৃতিকারীরা। এসব অনুষ্ঠানের আড়ালে এই চক্রের সদস্যরা সুযোগ বুঝে চুরি সংঘটিত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তারই অংশ হিসেবে (৭ ফেব্রুয়ারী) বুধবার ভোররাতে উপজেলার পারুলিয়া সোনালি ব্যাংকের নীচতলার মোজদ্দেদীয়া ফার্মেসি, দেব ভ্যারাইটি ষ্টোর, রেজাউলের জুতার গোডাউন এবং রেইনবো টেইলার্স থেকে চুরির ঘটনা ঘটে। সার্কাস প্যান্ডেলের প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে এ চুরির ঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চুরি হওয়া প্রতিষ্ঠানের সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে মুখ ঢেকে দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ টাকা ও মালামাল নিতে। পরে চোরচক্র কৌশলে পালিয়ে যায়। বর্তমানে গোটা এলাকার ব্যবসায়ীদের মনে দারুণভাবে ভীতি কাজ করছে। এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়েও ব্যবসায়ীরা রীতিমত টেনশানে পড়েছেন। সার্কাস আয়োজন বন্ধ না হলে প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন অনেক ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, সার্কাস প্যান্ডেলে দর্শক আকর্ষণ করতে সেখানে মনোরঞ্জন দিতে আনা হয়েছে যশোরের বিশেষ এক পল্লীর নর্তকীদের। এছাড়া চলচ্চিত্রের বাদ পড়া “বি” গ্রেডের নায়িকা নামধারীদের এনে মাইকিং করে দর্শকদের আকর্ষন বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু এরমধ্যে নাচ, গান আর নামমাত্র সার্কাসের আয়োজন করেছেন পারুলিয়ার একটি জুয়াড়ি ও মাদকসেবী চক্র। আয়োজকদের জুয়ার আসর বসিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার স্বপ্নটি বন্ধ। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে প্রচারের মাধ্যমে শব্দ দূষণ করে যাচ্ছেন আয়োজকরা। তাছাড়া এসএসসি পরীক্ষার অন্তিম মুহুতে প্রস্তুতি নিয়ে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার মুখোমুখি সময় এমন আয়োজন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মন বসাতে পারছে না। দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শব্দ যন্ত্রের তীব্র আওয়াজে শিশুসহ অসুস্থ মানুষদেরকে শারিরিক ও মানসিক বিপর্যয়ে ঠেলে দিচ্ছে। পরীক্ষার পূর্ব মুহুতে এমন আয়োজনের অনুমতি নিয়েও এলাকায় চলছে নানা সমালোচনা।
স্থানীয়রা জানান, সার্কাসের টাকা জোগা করতে উঠতি বয়সের যুবকরা এমন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এলাকায় এমন কর্মকান্ড আরো বেশিদিন চলতে থাকলে বাড়িতে বাড়িতেও চুরির মত ঘটনা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে এমন আয়োজনে সমাজিকতার অবক্ষয় হচ্ছে। তাই এটি দ্রুত বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এবিষয়ে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ মাহমুদ হোসেন জানান, চুরির ঘটনায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তিনি আরো বলেন, সার্কাসকে কেন্দ্র করে অসামাজিক কর্মকান্ড, জুয়া, মাদকের বিকিনি করার সুযোগ দেওয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা কঠোর নজরদারীতে রাখা হয়েছে।
সম্পাদক: এস,কে রায়হান
ঠিকানাঃ প্রধান কার্যালয়ঃ নিরিবিলি বাজার, শাহপুর, তালা, সাতক্ষীরা। মোবাইল ০১৭১২-৯৯৫৮১৮ ইমেইল: somajchetona1122@gmail.com
somajchetona