বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার, রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরিক্ষায় মেধার মূল্যায়ন না করে, সর্বোচ্চ অর্থ প্রদানকারী প্রার্থীকে কে মূল্যায়ন করা হয় এমন অভিযোগ করেছে আবেদনকারীরা।
উলেখ্য রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ২৯ মার্চ ২০২৩ রোজ বুধবার, দৈনিক লোকালয়, ভোরের দর্পণ পত্রিকায় প্রকাশ হয়। উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রোজ শনিবার, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত হয়।
নিয়োগ প্রক্রিয়া টাকার বিনিময়ে হয়েছে বলে দাবী করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইশার উদ্দিনের ছেলে ও অফিস সহায়ক পদে প্রার্থী মানিক ইসলাম, তিনি বলেন আমি "অফিস সহায়ক" পদে প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি এবং পরীক্ষায় বিভিন্ন রকম অনিয়ম দেখতে পাই, পরীক্ষা বোর্ডে আগে থেকেই অফিস সহকারী ও অন্যান্য পদের জন্য প্রার্থীদের কাছে সর্বোচ্চ টাকা নিয়ে প্রার্থী চুড়ান্ত, করে তাদের প্রক্সি পরীক্ষার্থী ছিল। এই পরীক্ষাটা সাজানো নামমাত্র নাটকীয় পরীক্ষা ছাড়া কিছুই নয়।
ভাইভা পরীক্ষা না নেওয়ার আগেই প্রার্থীদের কাছে ভাইভা প্রশ্নপত্রে স্বাক্ষর করে নেন, আমি এ বিষয়ে দায়িত্বরত পরীক্ষককে প্রশ্ন করি যে, এই স্বাক্ষর তো পরীক্ষা নেওয়ার পরে দিতে হয় কিন্তু আপনারা আগেই কেন নিচ্ছেন, আমি পরীক্ষার পরে স্বাক্ষর দিব, কিন্তু আমাকে আগে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেছেন ।
একাধীক প্রার্থীর অভিযোগ ১৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মোঃ শাকিব পিতা মোঃ জয়নাল গ্রাম মধুপুর তাকে আগে থেকেই চুড়ান্ত করা হয়।
অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে কথা বললে তারা এই মর্মে অভিযোগ প্রদান করেন, সহকারী শিক্ষক পদে ১৮ লক্ষ, ও আয়া পদে ১৩ লক্ষ টাকার বিনিময় পূর্বেই তাদেরকে চূড়ান্ত করা হয়।
তিনি জানায়, আমি অফিস সহকারি পদে কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিতে পারায় আমাকে প্রার্থী থেকে বাতিল করা হয়।
মনকষ্টে মানিক ইসলাম জানায় আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমাকে সঠিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি, আমরা দু ভাই দীর্ঘ দিন নিঃস্বার্থভাবে আওয়ামীলীগের সেবায় নিয়োজিত। আমরা আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, নিয়োগ বাণিজ্যের এই অনিয়ম এর কাছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হয়ে অবহেলিত হয়েছি। তাই আমি এই নিয়োগ বাণিজ্যের তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা দাবি করছি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রার্থী বলেন, পরীক্ষার আগেই এমপি মহোদয়ের ঠাকুরগাঁয়ের বাসায় পরীক্ষার পূর্বেের দিন শুক্রবার, কয়েকজন নেতাকর্মী ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে দেখতে পাই, তারা দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন, কাকে কাকে চূড়ান্ত করা হবে সে ব্যাপারে আলোচনা করছিল বলে আমার বিশ্বাস, পরবর্তীতে এমপি মহোদয় আমাকে বলেন তুমি পরীক্ষা দিতে আসিও না তোমাকে নিবে না, আমি এমপি মহোদয়কে, বিনীতভাবে জানাই যদি আমি পরীক্ষায় কৃতকার্য হই, তাহলে কেন আমাকে নিবে না। আমার কথার কোন উত্তর পাইনি আর সেজন্যই আমি পরীক্ষা দিতে যাইনি।
জনৈক প্রার্থী জানান, অনেকেই পরীক্ষায় উপস্থিত হননি, কারণ তারা পূর্বে জানতে পেরেছে উচ্চ অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হচ্ছে, সহকারী শিক্ষক পদে ১৩ জন, অফিস সহায়ক পদে ২৩ জন, আয়া পদে ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে আগে থেকেই তিনজন প্রার্থীকে বাছাই করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠে।
নিয়োগ বাণিজ্যের ও পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়ে রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান মুঠোফোনে বলেন, নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না, আর আমি পরীক্ষায় কোন অনিয়ম দেখতে পাইনি।
উক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পরেশ চন্দ্র সেন কে মুঠোফোনে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষায় অনিয়ম হয়েছে এ বিষয়ে কেউ যদি অভিযোগ করে এতে আমার করার কি, অভিযোগ করতেই পারে পরীক্ষায় অনিয়ম হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। পরীক্ষায় কে কে উপস্থিত ছিলেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন সেটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে জিজ্ঞাসা করেন, আমি সবার নাম জানি না।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও,সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন , তিনি বলেন নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে কিনা আমি জানিনা, আমার চাইতে আপনারাই ভাল জানেন, আমি আর কি বলবো, কোন প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ বা লেনদেন এগুলোর সাথে আমি জড়িত নয়, আমি এগুলোর কিছুই জানিনা।
সম্পাদক: এস,কে রায়হান
ঠিকানাঃ প্রধান কার্যালয়ঃ নিরিবিলি বাজার, শাহপুর, তালা, সাতক্ষীরা। মোবাইল ০১৭১২-৯৯৫৮১৮ ইমেইল: somajchetona1122@gmail.com
somajchetona