বিশেষ প্রতিনিধিঃ ২৪জুন পটিয়ার পৌরসদরের শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ একযোগে ১৭ জন শিক্ষককে বদলির আদেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত ১৩ জুন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন সুলতানা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই ১৭ শিক্ষকের বদলির আদেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে ১৭ শিক্ষককে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বদলি করে সেখান থেকে একজন করে শিক্ষককে শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থলাভিষিক্ত করা হয়।
শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন ক্রমে প্রশাসনিক কারণে তাদেরকে বদলি করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার নিম্নবর্ণিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান/সহকারী শিক্ষকগণকে জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সকল শিক্ষককে বদলি করে পদায়ন করা হয়।
পটিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমদ বলেন, গত বুধবার বদলির এ আদেশ পান। আদেশ পেয়ে শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বদলিকৃত বিদ্যালয়ের যোগদানপত্র দাখিল করছেন।
সূত্রে জানা গেছে, পটিয়া পৌরসদরের শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাবিবা চৌধুরী ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ–সভাপতির মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ–সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু তৈয়ব সোহেলের সঙ্গেও প্রধান শিক্ষকের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এতে আবু তৈয়ব সোহেল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
এদিকে সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাবিবা চৌধুরী কর্তৃক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পটিয়া থানা এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট একাধিক লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে দুই গ্রুপে বিভক্তি, দলাদলি ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করায় তা তদন্ত করে পরবর্তীতে তদন্ত প্রতিবেদনও দেয়া হয়।
পটিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু আহমদ বলেন, শিক্ষকদের দলাদলি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটনার কারণে স্বনামধন্য ওই স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। এ নিয়ে ঘটনা তদন্ত করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের একটি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে এ প্রতিবেদনটি উপজেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক এ আদেশ দেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল মামুন বলেন, শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত যুগোপযোগী ও ফলপ্রসু হবে বলে মনে করি।
এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামীতে অন্যকোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দলাদলি ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটনোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে। তিনি আরো জানান, এ বিদ্যালয়ে পরিচালনা পরিষদের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে পরিষদ গঠিত হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।