শাহরিয়ার কবির, নিজস্ব প্রতিবেদক : ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া মেধাবী সামিয়া তাহসিন হতদরিদ্র ও দিন মজুর বাবার মেয়ে।গত কয়েক মাস আগে যে সামিয়া দুরন্তপনায় মেতে উঠত পাড়া গায়ের আকাশ বাতাস, মেতে উঠত স্কুলে বন্ধুদের সাথে খেলা-ধুলায়।কিন্তু
নিয়তির কি নির্মম পরিহাস, সেই ছোট্ট সামিয়া আজ হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।টাকার অভাবে যদি চিকিৎসা না হয় তাহলে সকলকে ছেড়ে চলে যেতে হবে না ফেরার দেশে।বাঁচতে চায় সুন্দর এ পৃথিবীতে। আবারো ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ফিরে যেতে চায় স্কুল জীবনে। ফিরে যেতে চায় খেলার সাথীদের মাঝে।
সামিয়া হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রতিনিয়ত মার কাছে প্রশ্ন করে, ‘কবে সে স্কুলে যাবে? তার যে আর কিছুই ভালো লাগে না!’ ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ১১ বছরের সামিয়া তাহসিনের এই আকুতি প্রতিদিনই শুনতে হয় স্বজনদের। দুঃখে চোখ ফেটে জল এলেও মুখ বুজে সব সইতে হয় তাদের। বাচ্চাটার সামনে কোনোভাবেই প্রকাশ করতে পারে না যে, সে মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত। কীভাবেই বা বলবে অতটুকু ফুটফুটে বাচ্চাকে যে, চিকিৎসা না হলে বেশি দিন আর পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে না সে! আর কোনো দিনই স্কুলে যেতে পারবে না। পরীক্ষা দিতে বা ক্লাস করতে পারবে না। খুনসুটিতে মেতে উঠতে পারবে না বান্ধবীদের সাথে। তার হাসি মুখটি আর কখনই মুক্তো ঝরাবে না, সুখে অন্তর ভরিয়ে দেবে না বাবা-মায়ের!
প্রায় চার মাস আগে হঠাৎ শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে সামিয়া।ঢাকায় নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য।সেখানে ধরা পড়ে ব্রেন টিউমার। চলতি বছরের জুন মাসের ২০ তারিখে গ্রিন লাইফ হাসপাতালে টিউমার অপারেশন করা হয়। পরবর্তীতে বায়োপসি রিপোর্টে ধরা পড়ে মরণ ব্যাধি ক্যান্সার।
সামিয়ার বাবা মো. শুজাউদ্দীন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের মুড়াগাছা গ্রামের এক অতি সাধারণ দরিদ্র কৃষক। তার মা জোহরা খাতুন একজন গৃহিণী। চার ভাইবোনের মধ্যে সামিয়া তৃতীয়। সে স্থানীয় এইচ এম এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক জন মেধাবী ছাত্রী। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিতে খুবই ভাল রেজাল্ট করে এসেছে।
বোনের মধ্যে সবার বড়টি এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার পরেরজন নবম শ্রেণিতে পড়ছে। সবার ছোট ভাই, সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। সামিয়া'র ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবরে পুরো পরিবার এখন দিশেহারা।
সামিয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) প্রফেসর ডা. মো. ইউছুফ আলীর অধীনে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, ২০২৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ১৭টি কেমো ও ২৮টি রেডিও থেরাপি দিতে পারলে শিশুটি সুস্থ হয়ে যাবে। আর এই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অন্তত ২০ লক্ষ টাকা।
ইতোমধ্যে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রায় ছয় লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন সামিয়ার বাবা। চিকিৎসার বাকি খরচ জোগানো তার একার পক্ষে আর সম্ভব নয়। একদিকে সামিয়ার চিকিৎসা, অন্যদিকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অন্যান্য সন্তানদের লেখাপড়া আর সংসার খরচ। উভয় দিকেই চরম নাজুক অবস্থা শুজাউদ্দীনের। একদিকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে হতভাগা বাবার হতভাগা কন্যা, অপর দিকে বিপুল পরিমাণ টাকার যোগাড়ের অনিশ্চয়তা। কোন দিকে যাবেন এই অসহায় পিতা?
এখন প্রাণপ্রিয় সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান মানুষের দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছেন সামিয়ার বাবা ও পরিবার। ২০ লক্ষ টাকা সামিয়াদের মতো পরিবারে অকল্পনীয় হলেও সমাজের সবাই মিলে এগিয়ে এলে এই পরিমাণ অর্থ জোগাড় হওয়া হয়তো অতটা কঠিন হবে না। প্রয়োজন শুধুই সামান্য একটু ভালোবাসা আর অন্তর থেকে সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসা। আপনার খুব সামান্য অংশগ্রহণও হয়তো সামিয়ার বেঁচে থাকার রসদ হতে পারে। এক বিন্দু জল যেমন তৃষ্ণার্ত চাতককে বাঁচিয়ে তুলতে পারে, ঠিক তেমনি আপনার দেওয়া খুব সামান্য অর্থও হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারে সামিয়ার মুখের হাসি।
সামিয়াকে বাঁচাতে তার বাবা শুজাউদ্দীনের বিকাশ, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আপনার সহায়তা পৌঁছে দিতে পারেন।
মো. শুজাউদ্দীন, মোবাইল, বিকাশ ও নগদ নম্বর- ০১৭৩৫-১৮৬৭৯০, সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব নম্বর- ০১০০৫৪০০৬, সোনালী ব্যাংক, মাগুরা বাজার শাখা, তালা, সাতক্ষীরা।
বিন্দু বিন্দু জলে যদি অতল সিন্ধু হতে পারে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণায় যদি আদিগন্ত মরু গড়ে উঠতে পারে, তাহলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সামিয়াকে বাঁচানোও সম্ভব হবে।
শিশু সামিয়া নিজেও জানে না মরণব্যাধি ক্যান্সার তাকে ঘিরে রেখেছে, যে কোন মূহুর্তে নিভে যেতে পারে তার জীবনের প্রদীপ। সামিয়া জানে তার টিউমার হয়েছে অপারেশন করা হয়েছে এবার সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে।নিয়মিত আবার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যাবে। সত্যি কী সামিয়া স্কুলে যেতে পারবে?
সম্পাদক: এস,কে রায়হান
ঠিকানাঃ প্রধান কার্যালয়ঃ নিরিবিলি বাজার, শাহপুর, তালা, সাতক্ষীরা। মোবাইল ০১৭১২-৯৯৫৮১৮ ইমেইল: somajchetona1122@gmail.com
somajchetona