এসএম শহীদুল ইসলাম,বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকানো বিভিন্ন প্রজাতির ৮হাজার কেজি আম জব্দ করেছে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের সদস্যরা। রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো এ সকল আম ঢাকায় পাঠানো হচ্ছিল।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত টানা তিন ঘন্টার অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৬ সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার মেজর জেএম গালিব। সাতক্ষীরা শহরের বাঁকাল এলাকা থেকে জব্দ করা ওই আম বুলডোজারের চাকায় পিষে বিনষ্ট করা হয়।
জানা গেছে, রবিবার রাতে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার জিরেনগাছা থেকে দুই ট্রাক ভর্তি অরিপক্ক আম ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল জয়েন্ট ট্রান্সপোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এসময় সাতক্ষীরা শহরের বাঁকাল ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে ট্রাক ভর্তি আমগুলো আটক করে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের সদস্যরা।
এসময় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল আমিন বুলডোজারের চাকায় পিষে আমগুলো বিনষ্ট করেন। অভিযানে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনির হোসেন ও র্যাব-৬ সাতক্ষীরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনির হোসেন জানান, অরিপক্ক আমে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা মানবদেহের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার মেজর জেএম গালিব বলেন, গোপন তথ্যে জানতে পারি কালিগঞ্জ উপজেলার জিরেন গাছা থেকে ট্রাক ভর্তি অরিপক্ক আম ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে শহরের বাঁকাল ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে দুই ট্রাক থেকে ৮হাজার কেজি অরিপক্ক আম আটক করা হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ।
তিনি আরও বলেন, আমের মৌসুম শুরুর আগেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে আম পাকিয়ে বিক্রি করেছেন। এসব অপরিপক্ক আম ঢাকায় পাঠাচ্ছেন তারা। এই আমগুলো বাজারজাত করতে এখনো যথেষ্ঠ সময় বাকি আছে। বাইরে থেকে পাকা মনে হলেও আমগুলো আসলে অপরিপক্ক। রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে কাঁচা আম পাকানো হয়েছে। এই আম মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সাতক্ষীরায় নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ১২ মে গোবিন্দভোগ, ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন আম্রপালি গাছ থেকে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করণের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে কেউ গাছ থেকে আম সংগ্রহ করলে বা কার্বাইড ও কেমিক্যাল মিশিয়ে অপরিপর্ক আম বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।