আব্দুল্লাহ আল মামুনঃআগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসন নির্বাচনী হাওয়া জোরেশোরে চলেছে, সাথে প্রচার প্রচারণা চলছে জাকজমকপূর্নভাবে। সাতক্ষীরার চারটি নির্বাচনী এলাকার তিনটিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতার সম্ভাবনা উঁকি দিলেও সাতক্ষীরা-৩ আসনে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। আর সে কারণেই আসনটিতে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।আবার ভোটার উপস্থিতি কম-বেশির উপর ভর করে মাঠে রয়েছেন ৬জন প্রার্থী। শুধু মাঠে থাকা নয়-রীতিমত তারা নিয়মিত নির্বাচনী প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াতের বর্জনের মুখে আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আশাশুনি-দেবহাটা ও কালিগঞ্জ (আংশিক) উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ৬জন। এরমধ্যে টানা তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হক-এমপি আবারো নৌকার মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অংশগ্রহণ করছেন।সাতক্ষীরায় মেডিকেল কলেজ, নলতায় ম্যাটস প্রতিষ্ঠাসহ জেলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এই কর্মবীরের সাথে মাঠে ছুটে পারা অনেকের জন্য কষ্টকর। জাতীয় সংসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ডা. রুহুল হক দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নেও তার ভূমিকা অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন ডা. রুহুল হক আন্তজার্তিক ক্ষেত্রেও দেশের পক্ষে এবং সরকারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখে চলেছেন। ফলে তার নির্বাচনী এলাকায় তিনি নিজের অবস্থান অনেকটা শক্ত করতে পেরেছেন।এছাড়া সাতক্ষীরার সামগ্রিক উন্নয়নে ডা: রুহুল হকের অবদান অপরিসীম। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নলতা ম্যাটস্, আশাশুনি ও দেবহাটায় মডেল মসজিদ, আশাশুনি এতিমখানা, রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তিনি জননন্দিত হয়ে আছেন। সাতক্ষীরা-৩ আসনের নির্বাচনে ডা. রুহুল হকের সাথে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন জাতীয় পার্টির উদীয়মান নেতা জেলা জাতীয় পাটির অন্যতম সদস্য এড. স.ম আলিফ হোসেন, তৃণমূল বিএনপির পক্ষে সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন জাসদের রুবেল হোসেন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) পলিট ব্যুরোর সদস্য শেখ তরিকুল ইসলাম লড়ছেন চাকা প্রতীক নিয়ে, ন্যাশনাল পিপলস পাটি (এনপিপি) প্রার্থী মো. আব্দুল হামিদ আম প্রতিক এবং জাকের পার্টির মঞ্জুর হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন।২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৯ ভোট পেয়ে ডা: রুহুল হক প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী জামায়াতের রিয়াছাত আলী পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮০২ ভোট। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডা. রুহুল হক বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নির্বাচিত হন।২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ডা. রুহুল হক ৩ লাখ ৩ হাজার ৬৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-জামায়াত জোট মনোনীত বিএনপি প্রার্থী ডা. শহিদুল আলম পেয়েছিলেন ২৪ হাজার ৬৭১ ভোট। তবে এবারের নির্বাচনে ডা. রুহুল হকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকা অন্য পাঁচ প্রার্থীর সকলেই এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে তারা নতুন মুখ। প্রার্থীদের কেউ দলীয় আদর্শ প্রচারের জন্য, কেউ পরিচিত হওয়ার জন্য এবং কেউ বিজয়ী হওয়ার আশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ডা. রুহুল হক ও এনপিপির প্রাথী আব্দুল হামিদ নিয়মিত মাইকিং করাসহ বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করছেন। এবারের নির্বাচনে এই আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ২৪৬জন এবং মহিলা ২ লাখ ১৩ হাজার ১৩১ জন এবং হিজরা ৩জন। আগামী ৭ জানুয়ারী ভোটাররা তাদের মনোনীত একজন যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করে আগামী ৫ বছরের জন্য জাতীয় সংসদে তাদের উন্নয়নের কান্ডারী হিসেবে বেছে নেবেন এমনটাই সচেতন মহলের আশাবাদ।