মো লুৎফুর রহমান রাকিব : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, এনডিসি, পিএসসি (অব.) বলেছেন, পুলিশকে তার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস পুনরুদ্ধার করতে হবে। এ জন্য মন মানসিকতা পরিবর্তন করে ভালো কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে পুলিশ জনবান্ধব।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যারা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করেছে তাদের কোন সমস্যা হবে না। সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে পরিস্থিতি বিবেচনা করে। পুলিশ নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নেয়ার পর সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফিরে যাবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, পুলিশের সেবা নিতে এসে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হন, সেটা খেয়াল রাখতে হবে, কেননা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আপনারা চলেন। সাধারণ মানুষকে সম্মান করতে হবে। চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কাউকে গ্রেফতার করার সময় অবশ্যই নিজের পরিচয় দিতে হবে। কোন অবৈধ আদেশ পালন করা যাবে না। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অন্যতম কারণ ছিল ঘুষ, দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি। পুলিশকে অবশ্যই ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে। দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মাদক ঢুকে গেছে। মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, পুলিশকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে। কেননা আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি ধৈর্য্য সহকারে বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
উক্ত মত বিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ ময়নুল ইসলাম, এনডিসি, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, একটি রক্ত স্নাত অধ্যায়ের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় বিজয় অর্জন করেছি। পুলিশের প্রতি যে জন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, কাঙ্খিত সেবা দিতে না পারলে সে বিজয় নস্যাৎ হয়ে যাবে। আমাদের পূর্ণ উদ্যমে কাজ আরম্ভ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএমপি কমিশনার জনাব মোঃ মাইনুল হাসান পিপিএম, এনডিসি। তিনি সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি। সাম্প্রতিক আন্দোলনে ডিএমপির বিভিন্ন স্থাপনা ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত এসব মেরামতের কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বর্তমান সরকারের সঠিক দিকনির্দেশনায় পুলিশ অচিরেই জনবান্ধব একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে পৌঁছলে একটি সুসজ্জিত দল তাঁকে গার্ড অফ অনার প্রদান করে।
মত বিনিময় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন জনাব মোঃ ফারুক হোসেন, জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) ডিএমপি।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোঃ ইসরাইল হাওলাদার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মোঃ শওকত আলী; যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ উপস্থিত ছিলেন।