স্টাফ রিপোর্টার: মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক, সাবেক প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধাভাজন মো: আমিনুল ইসলাম এর একমাত্র পুত্র; চাঁদখালী ইউনিয়নের কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ন সচিব, ক্রীড়া পরিদপ্তরের সম্মানিত পরিচালক- জনাব আ,ন, ম তরিকুল ইসলাম তার নিজ (ধামরাইল, পাইকগাছা, খুলনা) গ্রামের দুস্থ, অসহায়, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে ঈদ উপলক্ষে খাদ্য সামগ্রী, নতুন পোশাক ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন।
ধামরাইল গ্রামের অধিকাংশই মানবেতর জীবন যাপন করছেন, কর্মহীন ও অসহায় মানুষদের এই রোজার সময় সীমাহীন কষ্টে ভুগছেন, ঠিক তখনই আবারও গ্রামের দূস্হ, অসহায়, বিধবা ও প্রতিবন্ধী লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। প্রত্যেকটা পরিবারের জন্যঃ
১) চাউল ৫ কেজি।
২) ডাল ১ কেজি।
৩) আলু ২ কেজি
৪) পিয়াজ ২ কেজি
৫) তেল ১ লিটার
৬) রসুন ৫০০ গ্রাম।
৭) লাচ্চি সেমাই ১ কেজি ।
৮) চিনি ১ কেজি
৯) লবন ১ কেজি
মোট ৬০ টি অসহায়, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও দুস্থ পরিবারকে ( প্রতি পরিবারের জন্য ১৪ কেজি ৫০০ গ্রাম) খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া গরীব ১০০ জনের মধ্যে শাড়ী, পাঞ্জাবি, গেন্জি ও লুংগি বিতরণ করেন। আর যারা রোগগ্রস্ত ৫০ জনের চিকিৎসার জন্য নগদ টাকা বিতরণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন এতিমখানা, অটিজম স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা করেন।
এ বিষয়ে ধামরাইল গ্রামের বাসিন্দা মো: আব্দুর রাজ্জাক মোড়ল বলেন, এই গ্রামের অনেক লোকের টাকা আছে কিন্তু কেউ কোনো ধরনের সাহায্য সহায়তা করেনা, কেউ খোঁজ খবর ও নেই না। শুধুমাত্র তরিকুল ইসলাম সকল দূঃসময়ে গ্রামের অসহায় লোকদের পাশে দাঁড়ায়, তার টাকা নাই কিন্তু তার একটা মন আছে, অনেক বড় মনের অধিকারী। আরও বলেন আল্লাহ তাকে অনেক বড় করুক যাতে আমাদের গ্রামের অসহায় লোকদের পাশে বেশি বেশি দাড়াতে পারে। তিনি বলেন, করোনার সময় গ্রামবাসীকে একাধিকবার নগদ১০০০/২০০০/৩০০০/ টাকা করে দিয়েছেন, খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন, ইউনিয়ন ব্যাপী মাস্ক বিতরণ করেছেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা মো: আকবর হোসেন বলেন, এই গ্রামের সকল অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো তরিকুল ইসলামের জন্য নতুন কিছু নয়, তিনি সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়ান। আরও বলেন, করোনার মহাদূর্যোগকালে একাধিকবার আমাদেরকে আর্থিক সাহায্য সহ খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। আল্লাহ তাকে অনেক বড় করুক।
বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তরিকুল ইসলাম এর পিতা মোঃ আমিনুল ইসলাম আর আমি একই ক্যাম্পের অধীনে একসাথে যুদ্ধ করেছি। তার পিতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং এই অঞ্চলের স্বনামধন্য একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি বলেন, তরিকুল ইসলাম অতি সাধারণ জীবন যাপন করেন। তিনি একজন বড় অফিসার কিন্তু গ্রামের সকল স্তরের মানুষের সাথে এমন ভাবে মিশেন, অফিসার সুলভ কোনো আচারন আমাদের সাথে করেন না। তিনি আরও বলেন, সকল দূঃসময়ে গ্রামের অসহায় লোকদের পাশে দাঁড়ায়, এবার এটা নতুন নয়। গ্রামের যে কোনো বিষয়ে, যে কোনো সমস্যায় সর্বাগে তরিকুল ইসলাম কে পাওয়া যায়, তিনি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে থাকেন । করোনাকালীন সময়ে গ্রামবাসীর জন্য তিনি যা করেছেন সেটা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আমরা দোয়া করি সে আরও বড় হোক।
অপর বাসিন্দা আনিছুর রহমান মোড়ল বলেন, তরিকুল ইসলাম গ্রামের অসহায় লোকদের সাহায্য সহযোগিতা করা সহ এলাকার লোকজনদের সব ধরনের সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়ান। সকল সময়ে তাকে পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন ধামরাইল গ্রামে ৫০ বছর চেষ্টা করে কেউ খেলার মাঠ করতে পারেননি, কিন্তু তরিকুল ইসলাম তার একক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে দক্ষিণ অঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ ফুটবল মাঠ তৈরি করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মাদকের আখড়া উচ্ছেদ করে সেখানে মাঠ তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন ধামরাইল গ্রামে দক্ষিণ পাড়ায় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে বড় জামে মসজিদ তৈরি করে দিয়েছেন বিদেশি সংস্থার সহযোগিতায়। তার এলাকার প্রতি যে টান, আকর্ষন, সেটা বিরল। আমরা ধামরাইল গ্রামবাসী তার জন্য গর্ববোধ করি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জনাব তরিকুল ইসলাম বলেন, এই গ্রামে আমার জন্ম, আবার এই গ্রামের মাটি হবে আমার স্হায়ী ঠিকানা। এই গ্রামের আলো, বাতাস, ধুলা, মাটিতে আমার বেড়ে উঠা, তাই আমি এই গ্রামের কাছে অনেক ঋনি। সেজন্য চেষ্টা করি গ্রামের যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার এবং গ্রামবাসীর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর তাতে ঋন শোধ হবে না, ঋন শোধ করা আমার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। তবে হয়তোবা ঐ ঋনের কিছুটা অংশ কমবে বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, আমি খুব ছোট্ট একটা চাকরি করি, তাই আমার কিছু করার ক্ষমতা নাই, তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করি আমার এলাকার জন্য এবং সব সময় সেটা করে যাব গ্রামের যে কোনো উন্নয়নমূলক বিষয়ে। আর আল্লাহ আমাকে যে টুকু সামর্থ্য দিয়েছে, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি গ্রামের অসহায় লোকদের আর্থিক সাহায্যসহ যে কোনো ধরনের সহায়তা করতে। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন এটাই আমার চাওয়া। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের দোয়ায় হবে আমার জীবনে চলার পথের পাথেয়।
জনাব তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, “আত্ন মানবতার সেবা করার মতো মহৎ কাজ এ দুনিয়ায় আর নেই, মানব সেবায় আল্লাহর সন্তোষ্টি — আর এই সুযোগ পাওয়া ও সৌভাগ্যের বিষয়”।
সবশেষে তিনি বলেন, অর্থ-বিত্ত, শক্তি-সামর্থ্য ও সহায়-সম্পত্তির সাময়িক সময়ের জন্য মালিকানা দেওয়া হয়েছে মানুষকে। মহান আল্লাহ এসবের মাধ্যমে মানুষকে পরীক্ষা করে থাকেন। যারা তা যথাযথ পন্থায় কাজে লাগায় তারা সফল। অন্যথায় কিয়ামতের দিন এজন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।