সমাজ চেতনা ডেস্কঃ সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন কর্মসুচীর মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ সকালে দূতাবাস চত্বরে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম(বার)। এরপর দূতাবাসে স্থাপিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রিয়াদের বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন, রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল এসময় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, চাকুরীসহ সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়েছে, নিপীড়িত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে বরাবরই রুখে দাঁড়িয়েছেন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭০ সালের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ মুক্তিকামী লাখো জনতার সামনে তাঁর বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার আপামর জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। রাষ্ট্রদূত বলেন- বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তিনি প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানার আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন- বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার রূপকল্প গ্রহন করেছেন এবং তা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সবাইকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাংলাদেশে প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার আহবান জানান।মহান স্বাধীনতা দিবসে তিনি প্রবাসীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নে ও ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।দূতাবাসের কাউন্সেলর মোঃ বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, এম আর মাহবুব, মোঃ মনিরুল ইসলাম ও হাফিজুল ইসলাম পলাশ আলোচনায় অংশ নেন । বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাঁর দর্শন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ, জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্য ও দেশ জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।